রংপুরে মেহেদি রং না শুকাতেই নববধূর হাত-পায়ের রগ কাটল স্বামী

প্রথম পাতা » অপরাধ » রংপুরে মেহেদি রং না শুকাতেই নববধূর হাত-পায়ের রগ কাটল স্বামী
মঙ্গলবার ● ২৯ অক্টোবর ২০১৯


 ---

এমবি নিউজ অনলাইন ডেস্ক :


হাতের মেহেদি রং না শুকাতেই রংপুরের পীরগাছায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীর ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে দিয়েছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।


শুধু তাই নয়, নির্যাতনের পর শ্বশুড়বাড়িতে ওই নববধূকে আটকে রাখা হয়।



খবর পেয়ে রোববার সকালে পীরগাছা থানা পুলিশ তাকে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।


এ ঘটনায় পীরগাছা থানায় নির্যাতিত নববধূর পক্ষে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।


অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের মনছুর আলীর ছেলে শাহজাদা মিয়া। তার সঙ্গে গত ২০ সেপ্টেম্বর পার্শ্ববর্তী তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া সরদারপাড়া গ্রামের ফজলুল হকের মেয়ে শিউলি বেগমের বিয়ে হয়।


এ সময় ফজলুল হক নগদ ৮৫ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার মেয়ে জামাইকে যৌতুক দেন। মেয়ের বিয়ের মেহেদীর রং মুছতে না মুছতেই জামাতা শাহজাদা মিয়া আরও ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। শুধু তাই নয়, নির্যাতিতা নববধূর বাড়ি থেকে যৌতুকের দাবিকৃত টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তার ওপার নির্যাতন করতে থাকে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।


এ নিয়ে গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় স্বামী-স্ত্রীর বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে স্বামী শাহজাদা মিয়া নববধূ শিউলি বেগমকে নির্মম নির্যাতন করেন এবং হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাড়ির লোকজন মিলে মধ্যযুগীয় কায়দায় নববধূর হাত-পায়ের রগ কেটে দেন।


এ সময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে আসামিরা তাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেন। পরে রাতে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসক দিয়ে নববধূর পায়ে ৫টি এবং হাতে ১৫টি সেলাই দিয়ে বাড়িতে আটকে রাখে।


এ সংবাদ পেয়ে মেয়ের মা রহিমা বেগম ও মামী পেয়ারা বেগম ঘটনাস্থলে গেলে আসামিরা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে বাধা দেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেন। পরে রোববার সকালে নববধূর বাবা ফজলুল হক পুলিশকে জানালে এসআই রিয়াজুল ইসলাম সঙ্গীফোর্স নিয়ে ওই বাড়ি থেকে নববধূকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।


সেখানে থানা পুলিশকে নির্যাতিতা মেয়ের বাবা ফজলুল হক বলেন, আমার মেয়ের বিয়ে ৩৬ দিনের মাথায় যৌতুকের জন্য হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়েছে।


পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আল হাদী মোহাম্মদ জানান, মেয়েটির অবস্থা আশংকাজনক। হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করায় সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে।


পীরগাছা থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, আমি খবর পেয়ে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। এ বিষয়ে নির্যাতিতা নববধূর বাবা ফজলুল হক একটি মামলা দায়ের করেছেন। আসমিদের গ্রেফতারের জন্য জোর চেষ্টা চলছে বলে থানা পুলিশ জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ৩:৩৯:১৩ ● ৮০৩ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ