ঢাবিতে ‘সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্রঐক্য’ গঠন

প্রথম পাতা » ঢাকা » ঢাবিতে ‘সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্রঐক্য’ গঠন
শুক্রবার ● ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯


 ---

এমবি নিউজ অনলাইন ডেস্ক :


এবার ‘সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্য’ নামে একটি নতুন ঐক্যের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় ১২টি ছাত্র সংগঠন। শুক্রবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এই ঐক্য জোটের ঘোষণা দেয়া হয।


এই জোট ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী, সাম্প্রদায়িক ও স্বৈরাচারী শক্তির বিরুদ্ধে একসঙ্গে সংগ্রাম পরিচালনা করবে। সন্ত্রাসবিরোধী ঐক্যজোটের মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- সন্ত্রাস দখলদারিত্বমুক্ত নিরাপদ গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করা।


জোটভুক্ত ১২টি দলের মধ্যে রয়েছে- কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র ফেডারেশন, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্কসবাদী), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, স্বতন্ত্র জোট ও ছাত্র গণমঞ্চ।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন।


সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি চারটি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- নুরুল হক নুরসহ সব শিক্ষার্থীর ওপর হামলাকারীদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও আইনানুগ বিচার করতে হবে, ব্যর্থতার দায়ে প্রক্টরকে অপসারণ করতে হবে, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং হামলায় আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার প্রশাসনকে বহন করতে হবে, ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং হলে হলে দখলদারিত্ব, গেস্টরুম-গণরুম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।


সংবাদ সম্মেলনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি আল কাদিরি জয়, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ অন্যান্য সংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্য আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে জানিয়ে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, ক্যাম্পাসে চলমান সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব ও সহিংসতার অবসানের জন্য ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া এখন সময়ের দাবি। এ অবস্থায় গণতান্ত্রিক শিক্ষাঙ্গন ও ছাত্র সমাজের স্বার্থে আন্দোলনকারী গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল ১২টি ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘সন্ত্রাস বিরোধী ছাত্র ঐক্য’ আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করছে।

---

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানীর পদত্যাগ দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে আখতার বলেন, অতিসম্প্রতি ডাকসু ভবনে ঢুকে ভিপি নূরুল হক নূরসহ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছে। হামলার দিন আমাদের নেতারা প্রক্টরকে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নৃশংসতা বন্ধে করার কথা বললে তিনি যথাসময়ে সেখানে উপস্থিত হননি বরং উল্টো ধমক দিয়ে কথা বলেছেন।


তিনি বলেন, প্রক্টরের এই আচরণে এটা স্পষ্ট করে যে, তিনি হামলাকারী মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের মদতদাতা এবং সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছেন। অর্থাৎ ছাত্রদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত প্রক্টর দায়িত্ব পালনে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি লাগানো হয়েছে, অথচ সেই সিসিটিভির ফুটেজ তিনি রক্ষা করতে পারেন না। উপরন্তু তিনি ইনিয়ে বিনিয়ে হামলাকারীদের পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এরকম একজন অমানবিক ব্যক্তি কোনোভাবেই প্রক্টরের পদে বহাল থাকতে পারেন না।


প্রসঙ্গত, গত ২২ ডিসেম্বর ডাকসু ভবনে এক হামলায় ভিপি নুরুল হকসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। ওই হামলার পরপরই সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্যের ব্যানারে প্রতিবাদ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। ওই ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্যকে জোট হিসেবে ঘোষণা দেয়া হলো।

বাংলাদেশ সময়: ২০:২৮:৩৯ ● ৪২৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ